টেকনিক্যাল অ্যানালাইসিসে চ্যানেল ট্রেডিং (channel trading) একটি গুরুত্বপূর্ণ টুল যা বাজারের চলমান ট্রেন্ড অনুসরণ করে
সঠিক বাই এবং সেল পয়েন্ট নির্ধারণ করতে সাহায্য করে। এখানে আমরা জানব কিভাবে চ্যানেল ট্রেডিং কাজ করে এবং এর বিভিন্ন ধরন সম্পর্কে বিস্তারিত।
চ্যানেল ট্রেডিং কী?
Channel trading হল এমন একটি টেকনিক্যাল কৌশল, যেখানে দুটি সমান্তরাল ট্রেন্ড লাইন আঁকা হয়। একটি লাইন হলো আপট্রেন্ড (ঊর্ধ্বমুখী)
এবং অন্যটি হলো ডাউনট্রেন্ড (নিম্নমুখী)। যখন এই লাইনগুলো একে অপরের সাথে সমান্তরাল থাকে, তখন একটি চ্যানেল তৈরি হয়।
এই চ্যানেল বাজারের প্রাইস মুভমেন্টকে সীমাবদ্ধ করে এবং ট্রেডারদের সঠিক বাই অথবা সেল সিদ্ধান্ত নিতে সহায়তা করে।


Channel trading এর ধরন:
1. ঊর্ধ্বমুখী চ্যানেল (Uptrend Channel)
ঊর্ধ্বমুখী চ্যানেল হলো সেই সময় যখন প্রাইস উপরের দিকে মুভ করে এবং “higher highs” এবং “higher lows” তৈরি হয়।
এটি নির্দেশ করে যে বাজারে শক্তিশালী ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা চলছে।
- কিভাবে আঁকবেন: আপট্রেন্ড লাইনের সাথে সমান্তরাল একটি লাইন আঁকুন এবং এটি সাম্প্রতিক বটম পয়েন্ট গুলোর সাথে কানেক্ট করুন।
2. নিম্নমুখী চ্যানেল (Downtrend Channel)
নিম্নমুখী চ্যানেল হলো সেই সময় যখন প্রাইস নিচের দিকে মুভ করে এবং “lower highs” এবং “lower lows” তৈরি হয়।
এটি নির্দেশ করে যে বাজারে শক্তিশালী নিম্নমুখী প্রবণতা চলছে।
- কিভাবে আঁকবেন: ডাউনট্রেন্ড লাইনের সাথে সমান্তরাল একটি লাইন আঁকুন এবং এটি সাম্প্রতিক টপ পয়েন্ট গুলোর সাথে কানেক্ট করুন।
3. সমান্তরাল বা সাইডওয়ে চ্যানেল (Sideways or Ranging Channel)
সাইডওয়ে চ্যানেল এমন একটি চ্যানেল যেখানে প্রাইস একটি নির্দিষ্ট পরিসরের মধ্যে চলতে থাকে, এবং কোন স্পষ্ট ট্রেন্ড দেখা যায় না।
এখানে প্রাইস উপরের এবং নিচের সীমার মধ্যে অটল থাকে।
- কিভাবে আঁকবেন: সাইডওয়ে চ্যানেল সাধারণত একটি অনুভূমিক সীমানা তৈরি করে, যেখানে ট্রেন্ড লাইন দুটি সমান্তরালভাবে চলে।
চ্যানেল ট্রেডিং করার সময় খেয়াল রাখার বিষয়:
1. সমান্তরাল ট্রেন্ড লাইন
চ্যানেল আঁকতে গেলে দুটি ট্রেন্ড লাইন অবশ্যই সমান্তরাল হতে হবে। এই লাইনগুলো যদি একে অপরের সাথে মিশে যায়,
তবে তা ভুল ট্রেড সংকেত দিতে পারে।
2. বাই এবং সেল জোন
- বাই জোন: চ্যানেলের নিচের অংশটি বাই করার জন্য উপযুক্ত, কারণ এখানে প্রাইস নিচে নামলে তা রিভার্সাল বা ঊর্ধ্বমুখী হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।
- সেল জোন: চ্যানেলের উপরের অংশটি সেল করার জন্য উপযুক্ত, কারণ এখানে প্রাইস উপরে উঠে নিচে নামার সম্ভাবনা থাকে।
3. ট্রেন্ড ব্রেকআউট
কখনও কখনও চ্যানেল ব্রেক করতে পারে, অর্থাৎ প্রাইস চ্যানেলের সীমা ছড়িয়ে নতুন ট্রেন্ড তৈরি করতে পারে। এটি একটি নতুন মুভমেন্টের জন্য সিগন্যাল হতে পারে, যা ট্রেডারদের নতুন ট্রেডের সুযোগ প্রদান করে।
চ্যানেল ট্রেডিং কৌশল(Strategy):
1. বাই (Buy) সিগন্যাল
যখন প্রাইস চ্যানেলের নিচের ট্রেন্ড লাইনকে হিট করে এবং তা আবার উপরে উঠে আসে, তখন আপনি বাই করতে পারেন। এটি ইঙ্গিত দেয় যে বাজারে একটি ঊর্ধ্বমুখী মুভমেন্ট আসছে।
2. সেল (Sell) সিগন্যাল
যখন প্রাইস চ্যানেলের উপরের ট্রেন্ড লাইনকে হিট করে এবং তা নিচে নামে, তখন আপনি সেল করতে পারেন। এটি ইঙ্গিত দেয় যে বাজারে একটি নিম্নমুখী মুভমেন্ট আসছে।
চ্যানেল (Channel) ট্রেডিং টিপস:
- ধৈর্য্য ধারণ করুন: চ্যানেল ট্রেডিংয়ে দ্রুত সিদ্ধান্তে আসা উচিত নয়। প্রাইসের আচরণ ভালোভাবে পর্যবেক্ষণ করুন এবং ট্রেন্ডের সিগন্যাল নিশ্চিত হওয়ার পর ট্রেড করুন।
- ভুল সংকেত এড়াতে চেষ্টা করুন: চ্যানেল আঁকার সময় জোর করে চেষ্টা করবেন না। প্রাইস যদি চ্যানেলের মধ্যে না থাকে, তবে তা ভুল ট্রেড সংকেত তৈরি করতে পারে।
channel trading এর সুবিধা:
- সঠিক বাই এবং সেল পয়েন্ট চিহ্নিত করতে সাহায্য করে।
- ট্রেন্ডের সঠিক দিক বোঝাতে সহায়তা করে।
- বাজারের রেঞ্জ বা ট্রেন্ড বিরতি থেকে উপকৃত হতে পারে।
চ্যানেল ট্রেডিং একটি শক্তিশালী কৌশল, যা সঠিকভাবে প্রয়োগ করলে ট্রেডাররা ভাল ফল পেতে পারেন। তবে এটি সবসময় পর্যাপ্ত গবেষণা এবং মনোযোগ সহকারে করতে হবে।
চ্যানেল ট্রেডিং সম্পর্কে বিস্তারিত ধারণা পেলে আপনি আপনার ট্রেডিং কৌশল আরও উন্নত করতে পারবেন এবং লাভের সম্ভাবনা বাড়াতে পারবেন।
ক্রস কারেন্সি পেয়ার: একটি সহজ ব্যাখ্যা